
নিজেই ঘরে বসে মাত্র ১২০ দিনে শিখুন ব্যাসিক ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট
আজ থেকে সিরিজ পোষ্ট গুলোতে ব্যাসিক ওয়েব ডিজাইন শেখার জন্য কি কি শিখবো? কতটুকু শিখবো? কেনো শিখবো? কিভাবে শিখবো? ইত্যাদি বিষয় গুলো নিয়ে ধারণা দেয়া হবে। প্রশ্নগুলোর গঠনমূলক উত্তর সহ বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে ব্যাসিক ধারণা পেয়ে গেলে আমাদের আস্তে আস্তে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। শুরুতেই বলে নিচ্ছি এই পোষ্টে কোনো প্রতিষ্ঠানকে প্রোমোট করা হবে না বা এটা কোন ব্যাবসায়িক চিন্তা ধারার পোষ্ট নয়।
ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট হলো বর্তমান একবিংশ শতাব্দীর ডিজিটাল স্কিল গুলোর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি স্কিল। ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস সহ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই একজন দক্ষ ওয়েব ডিজাইনার বা ওয়েব ডেভেলপারের মূল্য অনেক। তবে ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট শেখার ইচ্ছা অনেকের থাকলেও নানাবিধ সমস্যার কারণে হয়ত কেউ দক্ষ মেন্টর পান না কিংবা ভালো কোনো ট্রেইনিং ইন্সটিটিউটে ভর্তি হতে পারেন না।
তাই, আজ আমি আলোচনা করব কিভাবে ঘরে বসেই নিজে নিজে ওয়েব ডিজাইন এর ব্যাসিক বিষয় গুলোকে আয়ত্তে আনা যায়। ব্যাসিক বিষয় গুলো ভালোভাবে বুঝতে এবং শিখতে পারলে ভবিষ্যতে একজন ভালো ওয়েব ডিজাইনার বা ওয়েব ডেভেলপার হবার সম্ভাবনা অনেক। মনে রাখবেন, সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত। আমি নিজেও সমস্যার কারণে কখনো কোনো মেন্টর পাইনি এমনকি কোথাও এডমিশনও নিতে পারিনি। তবে আমার ভাগ্য ভালো যে, আমি গুগল এবং ইউটিউবের মতো পৃথিবীর সেরা মেন্টর পেয়েছি। তাই কথা না বাড়িয়ে শুরু করি।
পূর্বের পোষ্টে বলেছিলাম আমাদের ১২০ দিনের চ্যালেঞ্জের প্রথম ১৫ দিন ওয়েব ডিজাইন শেখার পূর্বে জানতে হবে, এমন ৫ টি মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে গুগল এবং ইউটিউবে স্টাডি করতে হবে। অতঃপর পরবর্তি ৬০ দিন অর্থাৎ, ২ মাস শুধু এইচ টি এম এল ও সি এস এস এবং জে এস নিয়েই বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখতে হবে, আর্টিকেল পড়তে হবে এবং শুধু টিউটোরিয়াল দেখলেই হবে না, সাথে সাথে সেগুলো প্র্যাক্টিস করে নিতে হবে যেনো কোডিং কখনো ভুলে না যান। একারণে আমরা দিনগুলোকে ভাগ করে নেবো।
আমরা শুধুমাত্র ব্যাসিক এইচ টি এম এল এবং ব্যাসিক সি এস এস শেখার জন্য ০৭ দিন + ১৫ দিন সময় ব্যয় করবো। ব্যাসিক জে এস তথা জাভাস্ক্রিপ্ট শেখার জন্য আমরা অবশিষ্ট সময়টা অর্থাৎ, বাকি এক থেকে দেড় মাস সময় নেবো। কারণ, জাভাস্ক্রিপ্ট একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এবং শেখাটা একটু কঠিন, তবে একবার ভালমত শিখে নিতে পারলেই অনেক উপকার হবে।
প্রথম পর্বঃ এইচ টি এম এল
শেখার জন্য সব কিছুই একদম ফ্রিতেই গুগলে এবং ইউটিউবে পেয়ে যাবেন। ব্যাসিক অবস্থাতেই ইংরেজি ভাষার কোনো ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখতে যাবেন না, ব্যাসিক অবস্থায় সব বাংলা ভাষাভাষীর টিউটোরিয়াল গুলো দেখবেন।
এখন কথা হচ্ছে, গুগলে বা ইউটিউবে কি লিখে সার্চ করব? আচ্ছা, তাহলে আমরা এই কি-ওয়ার্ড গুলো দিয়েই শুরু করতে পারি,
সার্চ রেজাল্ট থেকে ভালো একটি প্লেলিষ্ট খুঁজে নিয়ে শুরু করে দিন শেখা। সার্চ রেজাল্টে শুধু প্লে লিস্ট দেখার জন্য কীওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করার পরে FILTER এ ক্লিক করে TYPE এর কলাম থেকে Playlist সিলেক্ট করলেই হয়ে যাবে।
ভিডিও দেখে শেখার আগে নিচে লেখা টাইমলাইনটি মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন। দরকার হলে স্ক্রিনশট নিয়ে রাখুন কিংবা কোথাও কপি করে লিখে রাখুন। শেখার ক্ষেত্রে চাইলে এই টাইমলাইন অনুসরণ করতে পারেন। পরবর্তী পোষ্টে সি এস এস এর টাইমলাইন নিয়ে আলোচনা করা হবে।
(অবশ্যই আপনার কম্পিউটারে কোড লিখার জন্য একটি টেক্সট এডিটর থাকতে হবে। বিগিনার হিসেবে আমি আপনাকে বলবো, নোটপ্যাড প্লাস প্লাস টেক্সট এডিটরটি আপনার কম্পিউটারে ডাউনলোড করে অতঃপর ইন্সটল করে রাখুন। পরবর্তিতে অ্যাডভান্স লেভেলের কাজ শেখার সময় আপনি উন্নত মানের টেক্সট এডিটর ইন্সটল করে নেবেন)
ওয়েব ডিজাইন শেখার শুরুটা করতে হবে অবশ্যই এইচ টি এম এল ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে। কেননা, এই ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়েই পৃথিবীর সকল ওয়েবসাইটের মূল স্ট্রাকচার বা কঙ্কাল তৈরি করা হয়ে থাকে। ০৭ দিন আমরা শুধু ব্যাসিক এইচ টি এম এল শিখব। তাই আপনি যেভাবে এইচ টি এম এল শেখা শুরু করবেন,
- প্রথম দিন। এই দিনে প্রথমেই শুরু করবেন এইচ টি এম এল এর ট্যাগ, এলিমেন্টস, অ্যাট্রিবিউট কি সেসব সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা দিয়ে। ট্যাগ কি সেসব শেখা হয়ে গেলে সবচেয়ে দরকারী ট্যাগ গুলো যেমনঃ- মেটা ট্যাগ, বডি ট্যাগ, হেডিং ট্যাগ, প্যারাগ্রাফ ট্যাগ, লাইন ব্রেকিং ট্যাগ, ইমেজ ট্যাগ, লিংক ট্যাগ, টেবিল ট্যাগ, লিস্ট ট্যাগ ইত্যাদি গুলো নিয়ে প্র্যাক্টিকালী শেখা শুরু করে দেবেন।
- দ্বিতীয় দিন। এই দিনে স্টাইলিং এট্রিবিউট, ট্যাগ দিয়ে টেক্সটের বিভিন্ন ফরম্যাট যেমনঃ- ইট্যালিক, এমফ্যাসিস, সুপারস্ক্রিপ্ট,সাবস্ক্রিপ্টইত্যাদি লেখা, একটি এইচ টি এম এল ডকুমেন্টের ভেতরে কমেন্ট করা, কোটেশন ট্যাগ, আইফ্রেম নিয়ে প্র্যাক্টিকালী শেখা শুরু করে দেবেন।
- তৃতীয় দিন। এই দিনে শুরু করবেন এইচ টি এম এল এ কিভাবে আইডি, ক্লাস অ্যাট্রিবিউট গুলো ব্যাবহার করতে হয় এবং এর উপকারিতা গুলো জানবেন এবং টেক্সট এডিটরে লিখে লিখে প্র্যাক্টিস করবেন। এছাড়াও কিভাবে বিভিন্ন সিম্বল যেমনঃ- কপিরাইট সিম্বল, অ্যাস্টেরিস্ক সিম্বল, কোটেশন সিম্বল ইত্যাদি সিম্বল এবং এগুলোর Entity গুলো লিখতে হয় সেসব জেনে নেবেন। কেননা ভবিষ্যতে এগুলোর অনেক ব্যাবহার করতে হবে।
- চতুর্থ দিন। এই দিনে একটু শুরু থেকে শুরু করবেন। ভয় পাবেন না, পূর্বের দিনের স্টেপ গুলো রিপিট করতে হবে না। এই দিনে আপনাকে জানতে হবে একটা ওয়েবসাইটের সাধারণ স্ট্রাকচার কেমন হয়। সেই স্ট্রাকচার এ কি কি সেকশন থাকতে পারে, কিভাবে স্ট্রাকচার গুলো লিখতে হয় ইত্যাদি জানতে হবে। একটি ওয়েবসাইটের লেআউট কেমন হতে পারে সেটা জেনে নেবেন। একটা ওয়েবসাইটের কমন স্ট্রাকচার হলো, প্রথম অংশ হলো হেড অংশ। এখানে সাইটের লোগো, নেভিগেশন বার, স্টিকি কন্টাক্ট ইনফর্মেশন ইত্যাদি থাকবে। এর পরের অংশ হলো বডি অংশ। এখানে ওয়েবসাইটের সকল প্রধান কন্টেন্ট গুলো থাকবে। এর পরের অংশ বা শেষ অংশটি হলো, ফুটার। এখানে কন্টাক্ট ইনফো থেকে শুরু করে কপিরাইট ইনফো, নিউজলেটার ফর্ম, কুইক লিংক ইত্যাদি থাকতে পারে। তাই এই দিনে ওয়েবসাইটের লেআউট এবং স্ট্রাকচার সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জন করার চেষ্টা করবেন।
- পঞ্চম দিন। এই দিনে আপনি নতুন কিছু শিখতে যাচ্ছেন। যেহেতু আপনি কমন কিছু ট্যাগ সম্পর্কে ইতিমধ্যেই ভালো ধারণা পেয়ে গিয়েছেন, তাই আপনাকে এখন এইচ টি এম এল – এ ব্যাবহার করা হয় এমন আরো কিছু অতিপ্রয়োজনীয় নতুন ট্যাগ গুলো এবং সেগুলোর ব্যাবহার সম্পর্কে জানতে হবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই আপনি এইচ টি এম এল এ ব্যাবহার করা হয় ডিভ ট্যাগ এর ব্যাবহার জেনে নেবেন। সাইটে কিভাবে নেভিগেশন বার বা মেনু বার আনতে হয় সেটা শিখবেন। মেনুবারকে সি এস এস দিয়ে এখনই ডিজাইন করতে হবে না কারণ, আপনি এখন শুধুই এইচ টি এম এল শিখছেন।
- ষষ্ঠ দিন। এই দিনে এইচ টি এম এল দিয়ে একটি অতি সাধারণ ফর্ম তৈরি করা শিখবেন। ফর্ম তৈরির জন্য ব্যবহৃত ইনপুট ট্যাগ ও এর এট্রিবিউট, ভ্যালু গুলোর প্রয়োজনীয়তা শিখবেন এবং সাথে সাথে নিজেও প্র্যাক্টিক্যাল ভাবে করার চেষ্টা করবেন।
- সপ্তম দিন। আজ আপনার ব্যাসিক এইচ টি এম এল শেখার শেষ দিন। এই দিনে ওয়েবপেইজে কিভাবে ইমেজ, ভিডিও কিংবা অডিও ইত্যাদি যুক্ত করতে হয় এবং সেগুলোর জন্য ব্যবহৃত ট্যাগ গুলো সম্পর্কে জেনে নেবেন। আপনি এতদিন যা শিখেছেন সেসব জ্ঞান প্রয়োগ করে অর্থাৎ শুধুই এইচ টি এম এল দিয়ে একটি অতি সাধারণ ওয়েবসাইট ডিজাইন করবেন। যেখানে একটা মূল বড় হেডিং থাকবে, আপনার একটি ছবি থাকবে, ছবির নিচের অংশে আপনি আপনার সম্পর্কে লিখবেন, একটি বাটন তৈরি করবেন যেটাতে ক্লিক করলে সরাসরি আপনার ফেইসবুক আইডিতে নিয়ে যাবে। এরও নিচে একটা সাধারণ ফর্ম তৈরি করে দেবেন। এবং সব শেষে সাইটের ফুটার অংশ তৈরি করবেন এবং সেখানে এই সাধারণ এবং জিবনের প্রথম ওয়েবসাইটটি যে আপনি ডিজাইন করেছেন, সেটা লিখতে পারেন। যেমনঃ ©All Rights Reserved By [আপনার নাম]। এভাবেই আপনার ব্যাসিক এইচ টি এম এল শেখা সফল ভাবে শেষ হবে।কোনো ট্যাগ ভুলে গেলে সেটা নিয়ে বেশী বেশী প্র্যাক্টিস করা শুরু করবেন।
আজ এপর্যন্তই। পোষ্ট বেশী বড় হয়ে গেলে আপনাদের পড়ার আগ্রহ চলে যাবে। ইনশাআল্লাহ, অতি শীঘ্রই সিরিজ পোষ্ট এর দ্বিতীয় পর্বঃ- ব্যাসিক সি এস এস নিয়ে আলোচনা করা হবে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন, সবার জন্য শুভকামনা রইলো। যেকোনো প্রকার প্রশ্ন কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমি লেখালেখি তে একদমই নতুন। তাই সকল প্রকার ভুল ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো।
ধন্যবাদ
দ্বিতীয় পর্বঃ- নিজেই ঘরে বসে মাত্র ১২০ দিনে শিখুন ব্যাসিক ওয়েব ডিজাইন – Raihan Noor
মার্চ 3, 2020[…] করব ইনশাআল্লাহ। চলুন শুরু করিচাইলে প্রথম পর্ব পড়ে আসতে পারেন। পূর্বেকার মতো […]
Romzan
সেপ্টেম্বর 24, 2020Begenar der jonno ami mony kori khub helpfull post.karon amr sobai shikty cai and shiki but ei shikhar ekta dhara/step acy sei step by step shikty na parly boro problems hoi.kintu ekhany sundor vaby step flow kora hoyacy eta kew bolty cai na.